
হৃদয়তন্ত্র বা ঘুড়ি সমাচার
নামফলক
আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু ন্যায়সঙ্গত খুনের পরিকল্পনা আছে;
বিশেষত একটা ধারালো চাকু
সবসময় হাতের কাছে থাকলে
এমন কোনো নারীকেই পাওয়া যেত না খুঁজে
যাদের নামে রুজ্জু নেই
দু’ডজন তিন ডজন খুনের মামলা।
আমাদের প্রত্যেকর ভেতরেই আছে
অনেক অব্যক্ত জরুরি কথা
স্বাধীনতা থাকা স্বত্ত্বেও সেগুলো বলতে পারি না আমরা
যেগুলোর সাথে রাষ্ট্রীয় কোনো সম্পর্কও নেই
অথচ আমরা বাকস্বাধীনতার জন্য সবসময় লড়াই করি।
আমাদের প্রত্যেকেরই দু’চোখভরা স্বপ্নছিল একদিন,
আমরাও হতে চেয়েছিলাম কবি, বিজ্ঞানী, মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী
কিন্তু আমাদের চোখগুলোতে পাথর বসিয়ে
কে যেন উদ্ধোধন করে গেছে নিজের নামফলক।
যুদ্ধবিরোধী কবিতা
ইউক্রেনের রাস্তায় পড়ে থাকা মানুষের খন্ডাংশগুলো
জোড়া লাগাই সারাক্ষণ মনে মনে আমি
রাস্ট্রের প্রয়োজনে না হোক ব্যক্তিগত বিষয় আবারও কথা বলুক তারা
আবারও হাঁটুক চেরিফুল বিছানো পার্কে,
স্ত্রী, সন্তান বা অন্য কোনো নারী-পুরুষের সংস্পর্ষে।
ছিনিয়ে নিই বর্বর ইজরাইলী বাহিনির হাত থেকে
ফিলিস্তিনি তরুণীকে
যেন রিমঝিম চুড়ির শব্দ শোনা যায় পৃথিবীতে
আল আকসার ভেতরে কিশোরকে মারধোরের
যে নির্মম কান্না টেলিভিশনগুলো শোনালো স্পষ্ট করে
তার মুখেও ফোটাই হাসি নানান গল্প বিনিময়।
ইয়েমেনের অপুষ্ট শিশুদের বুকের
হাড়গুলোও ঢেকে দিই দুধে ভাতে
আফ্রিকার শিশুদের মুখে মাটি ও ঘাসের পরিবর্তে
সরবরাহ করি দামী বার্গার ও পুষ্টিকর খাবার।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নির্বাক শিশুদের ফিরিয়ে দিই স্কুল
খেলার মাঠ, বন্ধু, সহপাঠী, শিক্ষক
যে পাখিটা রোজ ঘুম থেকে ডেকে তুলত তাদের
আরাকান আর্মির আগুন লাগানোর পর
ভয়ার্ত সে পাখিটিও রিফ্যুজি
তার খোঁজেও দিবানিশি চালিয়ে যাচ্ছি গুগলে অনুসন্ধ্যান।
নাফ নদীতে ওঠা সূর্যের মশাল এগিয়ে দিই ক্যাম্পের প্রতিটি নারী-পুরুষকে।
চীন-ভারত-পাকিস্তানের গা ঘেষে
লাগানো সম্ভাব্য যুদ্ধও ঠেকাই নানান মন্ত্রে
যাতে পূর্ব এশিয়াই হয়ে ওঠে পশ্চিমাদের শিক্ষালয়।
হৃদয়তন্ত্র বা ঘুড়ি সমাচার
ঘুড়ি উড়াবার সময় নিজেই উড়ে যাই আমি
পাখিরাই হয়ে ওঠে বন্ধু-স্বজন।
দূর থেকে মানুষদের মনে হয় প্রতিবন্ধক
নিম্নতর ধাঁধার শ্লোক
ইটের স্থপনাকে তীব্রতর অস্বাস্থ্যকর, অরুচির।
গাছপালা নদীনালার সম্মোহন ছাড়া
নিচে নামার টান পড়ে না সুতোয়।
মাঝে মাঝে কেটে যাই
যখন এই টান খুব লাগে হৃদয় তন্ত্রে।
বুকজ্বলা সূত্র
অগভীর কামনায় প্রায়ই দেখি তাকে
গাড়িতে, ট্রেনে, বাসে, জ্ঞানগম্ভীর সেমিনারে, মার্কেট সিড়িতে
তাকায় সোজাসুজি, স্বতস্ফুর্ত, সহজ সরল।
ঘোড়াগুলো গাড়িগুলোও হয়ে ওঠে রোমান্টিসিজম
সব রকম জারিজুরি, কালাকানুন ভেঙে
ছন্দ মাত্রাসহ সদ্য কবিতার চরণ
সরাসরি ঢুকে পড়ে
বুকজ্বলা সূত্রসমুল।
এলোমেলো হয়ে যাই
ভাবি না উত্তর দক্ষিণ
মুখ ফসকে বের হয় সুনীলের চরণ।
প্রকাণ্ড বাজার খুলেছে প্রভু সারা পৃথিবীতে
যেখানেই যাই, শুনি, পড়ি
এড়াতে পারি না এই অসার কোলাহল।
বিরহ
বিরহমান জল হয়ে যাই
দৃশ্যপটে ওড়ে শঙ্খচিল, শাদা বক।
তোমার তার তাহাদের
খোঁচার মতোন
হঠাৎ বৃষ্টি নামে।
চারিদিকে মেঘের অশনি।