
শোকের গণিত
শোকের গণিত
ছাপার মেশিন থেকে বেরিয়ে আসছে মৃত্যু
মৃতের জন্য প্রার্থনার দীর্ঘ হাত
শোক প্রকাশের অনুগত ভাষা
বেদনা ও বিষাদের পাহাড়, মরণ যাত্রা
একা ও নিঃসঙ্গ, সন্ধ্যা ছড়ানো পথ
ছেড়ে যাচ্ছে সমস্ত কোলাহল
এক এক করে, অবেলায়
সময় যেন আজ মৃত্যুর বাহন!
কেউ কাউকে ধরে রাখতে পারছে না
না পিতামাতা, সন্তান, না আত্মীয় অনাত্মীয়
সম্পর্করা আজ ছায়ার তরবারি!
মৃত্যুরা ঘুরছে মাথার উপর, মাছির পাখায়
দুঃসংবাদ পৌছে দিচ্ছে প্রতিগৃহে, কষ্টের ছাই
দুঃখরা রঙহীন।
ক্ষতি ও ক্ষতের সচকিত বোধ!
নক্ষত্র পতন
মদের দোকান থেকে বাড়িটা হারিয়ে গেছে, কবে
খুঁজিনি কতকাল!
দিকভ্রান্ত মাতাল…
শেষরাতে পাহারার হুইসেলে খুলে হুইস্কির বোতল
সময় বেলাজ!
জীবনের কোলাজ…
নিজেকে বিক্রি করি মুদির দোকানে অতি সস্তায়,
কাঁটাছেঁড়া রোজ!
সংসার নিঁখোজ…
যে জীবন নিজের নয় করিনি তার দীর্ঘ
আয়োজন
চরিত্র চর্বণ!
বিষাদ পর্বন…
গাঢ় হয় নেশার রাত নিজের সাথে হয় না বোঝাপড়া
ঘোরের কাল!
রহস্য ধূম্রজাল…
বোবাচিত্র
বাঘের গল্প শুনে শুনে শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে বিড়ালের পিঠে। যারা গল্প বলেছে, তারা কেউ বাঘ দেখেনি কখনও। ধার করা গল্প বিলি করছে পেশায় ও পোশাকে।
ঘুমে ঘুমে প্রহর বাড়ে। স্বপ্নের ভেতর শিশুরা পেরিয়ে যায় পাহাড় পর্বত। আগুনে পোড়া মাঠ। শৈশবের অর্ধমৃত নদী। কোমল অন্ধকারে বড় হয় মনে ও যৌবন।
রোদে মেলা কাপড়ের ভেজা গন্ধে জেগে ওঠে ওরা। চোখ খুলে দেখে পড়ে আছে আপন চৌকাঠে। সামনে ভাতের বদলে রাখা সাদা সাদা দুধের বাটি। শিশুরা চুক চুক করে খেতে গিয়ে উল্টে ফেলে অনভ্যস্থতায়।
স্বপ্নের ভয়ে শিশুরা ঘুমুতে যায় না আর।
বাঘের গল্প শুনে বিড়ালের পিঠে শুয়ে ওরা একদিন, ভুলে যায় নিজের স্বভাব। সময় অসময়ে পড়ে থাকে বড়দের পায়ের কাছে, বড় বেশী অযত্নে, অবহেলায়…
ছায়া ধারণের পর
বহুকাল দাঁড়িয়ে আছি নিঃসঙ্গ সিঁড়িতে
রক্তের দাগ মুছে পবিত্র হয়েছি কবে!
সময় ও সাহসে জেনেছি কার পায়ের ছাপ
পড়ে আছে এই বাংলার জনপদে
ঘুম ভাঙ্গিও না জনক ও জননীর
পাতা ও বৃক্ষের
শুয়ে আছে যারা অনন্তকালের স্তব্ধ প্রবাহে
যদি পারো
আয়ত্ব করো তাদের জীবন প্রণালী
স্বপ্ন ও সম্ভাবনা
ধ্যানে ও জ্ঞানে
কেঁদে ওঠো না সহস্র ভুলের নীরব আর্তনাদে
আঙুলে বোনে রোদের স্বভাব
সম্পর্কের নাভি ও নাড়িতে
জন্মসূত্রে এঁকে দাও বিবিধ চুম্বন।
ধারাপাত
সকল সম্পর্কে দূরত্ব থাকা প্রয়োজন
আয়ু বাড়ে,
দীর্ঘ হয় ফসলের মাঠ,
কিছুকাল দুরে গেলে
কাছের গল্পরা গৃহে ফিরে
সময় তৈরী করে সম্পর্কের নতুন পাঠ।
সম্পর্কের দূরত্ব মাপা যায় না কোন যন্ত্রে
যোগ-বিয়োগে
ধুলোর পৃষ্টায় মেঘলা হাতের ছাপ,
আঁকড়ে থাকে ফিতায়, বন্ধনে
জন্মের ছায়া অথবা মায়ায়
বৃত্ত, বৃত্তের বাইরে
হাজারো চোখের ভিড়ে
নির্ভরতার বহুবিধ মাপ।