
শৃঙ্খল ভাঙ্গার কারিগর
ভাস্কর্য
আমায় ঘুম পাড়িয়ে দাও কালের গহ্বরে
আমি না হয় ভাস্কর্য প্রস্তর যুগের স্থবিরতায়
পাথর দৃষ্টিতে দেখব কালের বিবর্তন।
পাথর চোখে যদি দু’ফোটা অশ্রু ঝড়ে
অবাগ বিস্ময়ে মুছিয়ে দিও না,
হৃদয় দিয়ে অনুভব করো-
পাথর হৃদয়েও অনুভূতি খেলা করে।
উপঢৌকন হয়ে শোভা নাইবা পেলাম
হৃদয় মন্দিরে,
পাশ কাটিয়ে সাজিয়ে রেখো বাগান বাড়ির বারান্দায়।
সূর্যের দাবদাহ কিংবা ঝড়ো হাওয়ার
আমায় আড়াল করো না চাঁদোয়ায়।
না হয় ক্ষয়ে যাবো সময়ের হাত ধরে
তোমরা ভালো থেকো।
শৃঙ্খল ভাঙ্গার কারিগর
ধীর অনুরণে বয়ে যায় মধ্যরাতের নীরবতা,
কিছু সুখ কিছু শোকে মথিত হৃদয়
নিজের ভেতর খুঁজি গভীর বিরহের কথা।
দূরন্ত বিরহ, বড় দীর্ঘ, প্রলম্বিত হয়
কী এক অতৃপ্ত বাসনা কেবল ছুটিয়ে নেয় নতুনের কাছে,
অভিলাষি মন খুঁজে স্বপ্নিল সোনালী সোপান।
কেউ দেওয়ার জন্য পোড়ে, আলোক পিয়াসী পায় না
কেউ পিয়াসী প্রহর গুণে গুণে তপস্বী হয়
নিয়তি মেনে নেওয়ার গোলার্ধে বাস করি, তাই
নিয়তি চেপে বসে অধিকার বসে।
আলোর মিছিলে মশালবাহী অগ্রপথিক হতে পারলে ভালই হতো,
শৃঙ্খল ভাঙ্গার কারিগর…
কিছু বিপ্লব গোচরে, কিছু চলে অগোচরে
মোহনায় এলে নদী মরণ বলে তাকে-
জীবনও বলে তাকে।
সমুদ্রের দুর্বার টানে নদী সমুদ্রে মিশে
সমুদ্রে কোথাও লেখা নেই নদীর দুঃখ গাঁথা।
নীল সুরা
দু:খগুলো উড়িয়ে দাও
র্দীঘশ্বাসের তপ্তবাহনে ,
অতৃপ্ত ভেলা ভাসিয়ে দাও
ঘুড়ির রঙিন সুঁতোয় বেঁধে।
ঠোঁটের কোনে নীল কষ্টের সুরা
রাঙিয়ে দাও হাঁসির অনুরণে,
অব্যক্ত বাসনার রং
ওখানেই হোক বসতবাড়ি অনাড়ম্বর।
ঠোঁটে ঠোঁটে সৃষ্টি হোক
ভালোবাসার সুখ।
আকণ্ঠ তৃষ্ণা-
আলিঙ্গনের উষ্ণায় তৃপ্ত হোক।
অস্পষ্টে কাঁদে প্রাণ
বয়স বাড়ছে বঙ্কিম পৃথিবীর
সময় বয়ে চলে বিষম স্রোতে
অক্ষম আবেগে কাঁপে প্রাণ কাঁদে দু’নয়ন।
অন্ধকার সাঁতরায়ে এবার এসেছি
তুমি আছো, আমিও আছি
বৃত্তের ভিতরে বৃত্ত, বাহিরে বলয়
আচ্ছাদিত
পেছনে ছুটে চলে গভীর কুয়াশা।
বয়সের ভারে দেহলতা নুয়ে আসে
দীর্ঘশ্বাসে, অতিক্লান্ত পর্যদুস্ত ধূসরতা,
হৃদয়ে অস্পষ্ট অপূর্ণতা হাহাকার করে
যদি থাকে ভালোবাসার দুটি হাত হাতের মুঠোয়,
ঐ মৃত্যুর রেখা দেখা যায়
তবুও বয়স মানে না হৃদয়।
পরকীয়া
উদাসি বাউল নিজ জীবনের ভুলে
বেহালা বিরাগ হয়ে ছিঁড়ে ফেলে তার
ছুঁড়ে ফেলে বেহালাটা, বড় অনাদর
ধুলোর শরীর ভরা পতঙ্গের ঘর।
সহসা গায়েন এক আসনে ত্রাতার,
মনের খেয়ালে মুছে জোড়ে দেয় তার।
অতঃপর আঙুলের মায়াবী ছোঁয়ায়
টুং টাং, টিং টং, টিং সুর তোলে
তখন সমাজপতি রাঙিয়ে দু’চোখ
পরকীয়া! পরকীয়া! পরকীয়া বলে।