
ভাব বৈরাগ্য
বাড়ি
একদিন সেনগুপ্ত দিদি বলছিলেন;
আমার ফ্ল্যাটের এই ব্যালকনিটা আমার খুব প্রিয় জায়গা।
সকালে ঘুম থেকে উঠে এখানটায় এসে বসি,
বুলবুলির ডাক শুনি
টুনটুনির ডাক শুনি
ঘুঘুর ডাক শুনি
দোয়েল, চড়ুই আরও কত-শত পাখি আসে,
রাতে লক্ষ্মী পেঁচা—
গরমের দিনে হওয়া খাই—
বর্ষায় আকাশে কালো মেঘেদের আনাগোনা, অঝোর ধারার বৃষ্টি—
শরতে রোদ-মেঘে লুকোচুরি,
রাতে পূর্ণিমার চাঁদ।
শীতের সকালে মিষ্টিমাখা নরম রোদ—
সেনগুপ্ত’দি যখন বললেন—
আমার মনে হয়, সকলেরই তার বাড়ির কোনো একটা জায়গা বেশ ভালো লাগার থাকে।
আমি শুধু বলেছিলাম;
সবার তো বাড়ি থাকে না!
মূক
এভাবেই চাপা পড়ে যায় যাবতীয় লাম্পট্যের লীলা—
আয়ান ঘোষের সংসারে তাক করা কৌলীন্য কলংক শুধু ছেদ করে রাধার পাঁজর।
ঢেউয়ে-ঢেউয়ে ভেসে যায়
বেখেয়ালি জলের কলস—
যমুনার জলে উল্টে থাকে তাজমহল,
আর স্তুতিতে মহিমান্বিত হয়ে ওঠে কৃষ্ণ বা সম্রাট শাহজাহান—
এভাবেই দুঃখ বয়ে-বয়ে কত নদী মরে গেছে—
তবু আজও ভেসে আসে বেহুলার ভেলা লখিন্দর প্রাণ ফিরে পায়।
মরাগাঙের পারে দাঁড়িয়ে আমরা আজও যেন তামাশায় বিহ্বল!
নইলে কেউ-তো বলতে পারতাম;
সীতার অগ্নিপরীক্ষা মানেই রামের শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আর্য পর্যালোচনা
দেখা গেলো তাঁর শরীরেও বাসা বেঁধেছে ডায়াবেটিস, প্রেশার সহ নানান রোগ—
তবু বিজ্ঞাপনে কেউ কম যায় না।
দেহ আর আত্মার সবক দিতে-দিতে
ধর্মগুরু শুধালেন, দেহ-আত্মশুদ্ধিতে গুরুনামের মাহাত্ম্য।
ষাঁড়ের সীমানা জ্ঞান আর কালার ব্লাইন্ড প্রকৃতিগত জেনেই
এক ভোক্তার কথায় যে-ই উঠে এলো শস্য রক্ষা বিষয়ক অনাস্থা।
তখনই কৌশলী ধর্মগুরু শুধালেন,
তবু মনে রেখো বৎস, যেখানে দশের মিল সেখানেই ভগবান।
আর ভোক্তার বিনয়ী উচ্চারণ; ধরুন চল্লিশ চোরের বিশাল এক দল, আর আলীবাবা তো একজন?
ভাব বৈরাগ্য
বেসম্ভব কায়দায় বল ছুঁড়ে যে মন্ত্রী হ্যান্ডবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করলেন,
স্কুলজীবনে তাকে নুলা হিসাবেই জানতাম—
ধরুন, এমবিবিএস করা কিছু ছেলে বিসিএস করে পুলিশে বা প্রশাসনে নিয়োগ নেয়—
এতো গেল মেজাজ বিগড়ানো কথা,
তা’বলে কি বিনোদন নেই?
সে-ও প্রচুর—
সুযোগী কাঁঠালে কে না কোয়া খসাতে চায়—
যেমন,
দাঁত হারানো মানুষগুলোর নিরামিষবাদী হয়ে ওঠা দেখলে প্রচণ্ড হাসি পায়।
বিবৃতি
এমন ভাবনা কেন,
বিপ্লবীর কি প্রেম থাকতে নেই?
নিহত যোদ্ধার পকেটেও পাওয়া গেলো, যুগল চিঠির বাস।
এক চিঠিতে লেখা ছিলো ভালোবাসি ভালোবাসি—
অন্যটায় দীর্ঘশ্বাস!