
বেগুনি শাড়ির সাথে মেঘের সখ্যতা
নীরবতা
নীরবতা পাহাড় পাথর থেকে
কখনো ঘরে এসে দুঠোঁট নাড়ে
যেন ছায়ামানুষ সে।
ছায়ামানুষ কি মানুষের মতো?
তবে কেন তার জন্য অনুভূতিতে
বেদনার ঝড়ের সংকেত শত।
গভীর তাড়নায় খুঁজতে থাকি সেই মুখটা
যে মুখটায় লেগে থাকতো
সরল জ্যোৎস্না।
ঘরে-দোরে ছিল যার সোনার ঝলক
তাকে দেখে পড়তো না চোখে- চোখের পলক।
হারানো সে মুখ ফিরে ফিরে আসে
পাহাড় পাথর ভেঙে ভেঙে আসে।
কে দেখে নীরবতার রক্ত-মাংস
নীরবতা চঞ্চল বড়ো
মন পোড়া মানুষের মতো।
দূরত্ব
কাছে ছিল মনের কোণে মনের মতো আলো-আঁধারের মতো
মাটি আর লতাগুল্মের মতো
নদীর বুকে মিশে থাকা জল ও ঢেউয়ের মতো
আকাশ ভরা তারকারাজি আর চাঁদনী রাতের মতো
মোমবাতির আলোটা নিভে গেলে দূরত্ব হয় অসীম রকম
আজীবন না-পাওয়া
সবাই দূরত্ব নিয়ে একটা কাল কাছে থাকে শুধু
কবে হাত ধরে ছিলাম
কবে তোমার হাত ধরে ছিলাম
আজও সেই স্পর্শের ঢেউ খেলা করে রক্তের বাতাসে
জেগে ওঠে মনোগত কম্পন
ফিরে আসে কাল
ফিরে আসে তোমার রাঙা ঠোঁটের রঙিন হাসির মায়াবী ছায়া
ফিরে আসে অনিদ্রিত সুখের চিরায়ত বন্ধন
শুধু ফিরে আসতে পার না তুমি
শুধু ফিরে যেতে পারি না আমি
সকল জীবের মতো আমাদেরও সক্ষমতা নাই
সম্পর্কবদ্ধ সেকাল ফিরে নিতে পারেও না কাউকে
কী আছে তোমার হাতে
কী আছে তোমার হাতে
হাত ধরলে টের পাই-
আমার যতো শোকতাপ, পাপ পুণ্যে ভরে যায়
টের পাই-স্বর্গের শুভ্রতা নিয়ে উড়ে আসে আহ্লাদিত আদর
যেগুলোর স্পর্শে আমার পারিপার্শ, রাস্তা ঘরবাড়ি, দালান বসন্তের স্বরলিপি হয়ে গুণগুণ করে বাতাসে
যে আমি পাপ হারিয়ে নিরুপায়
যে পাপ আমি পুষেছিলাম নরকের সুখে
সেই আমি তোমার দর্শনে হয়ে উঠি বিমুগ্ধ শ্রোতা
আঁধার নেমেছে সৃষ্টির
বেগুনি শাড়ির সাথে মেঘের সখ্যতা কি লুকোচুরি!
না হলে রেহেজার আঁচল ভরা কেন এতো
থোকা থোকা কালো বুটির চোখাচোখি
কেন এতো আলাপ আন্দোলিত দমকা বাতাসে।
আকাশে উঠেছে চাঁদ
হৃদয়ে লেগেছে জ্যোৎস্নার আগুন
কামনার চুম্বকে কাঁপছে জমিন
ঘুটঘুট আঁধার নেমেছে
সৃষ্টির প্রয়োজনে দৌড়ে আসছে রাখাল।
ভ্রমণ
বিকেলটা নৌকায় উঠে
পাশের গাঁয়ে যেতে কিছু গাঙচিল কুড়িয়ে দেয় অনেকগুলো মাছ।
সন্ধ্যে নেমে আসার আলোছায় মাছগুলো নড়ছিল সকালের মতো নরম আর দুপুরের মতো তরতাজা রঙিন নয়নে।
চারপাশে শেওলার দেয়াল ধরে জীবিত মানুষেরা দাঁড়িয়ে কী করছে
দেখছে কি মায়াবতী অঞ্চল চোখের জলে?