
বাড়ি ফেরার তৃষ্ণা
আজ সারারাত্রি
আজ সারারাত্রি তোমাকে দেখব
একাই উড়ব ভোর হাওয়ায়
সকল পাতার নকশায়
ভোর আলোর শিরা-উপশিরায়
তোমাকে লুকিয়ে রেখে
খুলে খুলে দেখব ব্যথার কারুকাজ
গোপন ক্ষতগুলি
গোপন ক্ষতগুলি একদিন মুছে যাবে জানি
এগুলোই রয়ে যাবে স্মৃতিচিহ্নের স্তব্ধ মমি
আঁধার উপচানো নদের ওপারে
দেখব স্মৃতিচিহ্ন বিদ্যুৎ চাবুকে
দ্বিধার সমস্ত পাল তুলে মুছে দিও ভুলগুলি
সূর্যরশ্মির গ্রীবায় গেঁথে রেখো বনজ গোধূলি
বাড়ি ফেরার তৃষ্ণা
কিছুই থাকে না শেষে
নদীর বিনুনি খুলে হেসে উঠা ঢেউয়ে
হারিয়ে যাওয়া স্মৃতির ঝলক
নিকটে আসে।
ফিরে যায় আবারও জলের গভীরে।
পড়ে থাকে
ক্লান্ত শরীরের খোলা খাম।
রঙিন ফুলে ঢাকা পথের মোড়ে
প্রতীক্ষায় জোনাক আলোর ক্ষীণ দেহ
আর কিছু ধুলো
পায়ের আওয়াজ পাবে বলে অপেক্ষা করে।
একদিন এসবও মুছে যাবে।
ভালোবেসে কিছু পাখি
বাড়ি ফেরার তৃষ্ণা গেঁথে নিবে ডানায়।
অন্ধ তৃষ্ণার পেটি
অনেক রকম স্মৃতি ডুবোপাহাড়ের ঢালে এসে
প্রাণোচ্ছল স্নান দৃশ্যে ভেসে ওঠে ভোর হাওয়ায়,
অনন্ত উল্লাস যেন অজস্র পালক সঙ্গে করে
ভেসে যাবে বহুদূরে, যেখানে জীবনের সীমানা
কেউ যেন মুছে দিয়ে গেছে।
তবু একই দেহের ভিতর বহুব্যঞ্জনা বাজে,
বঞ্চনা-হতাশা ঠেলে নির্জন কোনো মনের দেশে
নিজের রক্ত-মাংসের মতো রক্তাক্ত মাংস স্বাদে
সকল অন্ধ তৃষ্ণার পেটি টুকরো টুকরো ক’রে
ভরিয়ে তোলে ক্ষুধার্ত জিভে।
রূপান্তর
মহুয়া ফুলের ঘ্রাণ থেকে ছিটকে পড়ে
তোমাকে চেয়েছি, অমরত্ব চাই নি।
তোমাকে ফিরে পেয়েছে ঘাসের বাহার।
অন্ধকার কেটে গেছে।
নিত্য চেতনের সঙ্গী চলে গেছে
গোধূলি ছড়িয়ে।
শুধু মনোবাসনা পড়ে আছে নদীর এপার।
বয়ান
জানি না পাখির পালকে রোদ ছুঁয়ে রাখা তোমার মনের খবর
তবু গভীর রাতে ঝাউবনে উদাস হাওয়া যে বার্তা বয়ে আনে
তাতে মন ফুরফুরা হয়ে যায়
জল আর পাথরের হাসিতে ফুটে ওঠে বিবিধ ইশারা
আমার বিরহ ফুরায়
তারাদের পতনের স্মৃতি আর মনে রাখি না
চোখ বুজে টেনে নিতে থাকি মাটির ঘ্রাণ
আনন্দময়ী সলকে ওড়ে তোমারই মনের বয়ান