
ধানের চিটা
ভাষার সি-বিচে
১
আমাকে কথার বিষে, কত লোক ধরাশায়ী করে;
কতদিন আগের দেয়াল, মোছে নাম, নরোম রাবারে!
এতো ওড়ে হাওড়-কুয়াশা, এতো ধূলা, স্মৃতির কবজ;
এতো হ্রেষা, থেমে থেমে মেঘ, কাছে ডাকে পানের বরজ!
তোমাকে কোথায় খুঁজি, পেয়ে গেছি কোথাও আবার!
ভীড় থেকে দূরের ভিটায়, গান বাঁধে সোলার প্যানেল;
তুমি এক মিথের চাবুক, আমি এক ধূসর গাধার
ছানি পড়া দু-চোখ আবার, ধরণীতে হয়েছি নাজেল!
২
যতোটা বেঁকেছে ধনুক, বুকে ও বসন্তে! যেনো তোমাকে লক্ষ্য করে এতোখানি চলে এসেছে রোদ, কাছে আজান হচ্ছে, এমন একটা আছরের আকাশ ধীর হয়, অযুদৃশ্যের ভিতর হাঁপানির টান উঠছে ডুমুরগাছে, মনে হয় তোমাকে কিছু বলার জন্য অপেক্ষা করছিলো এ-কার!
হয়তো চায়ের কথা বলতে বলতে তুমি একা অনেক্ষণ বসে আছো, কেউ ডুমুর গাছের দিকে মোটর গাড়ির কাজ করছে, কলকব্জায় গ্রীজ মাখতে মাখতে ঢুকে যাচ্ছে ভাষার গলার ভিতর, তাদের কথাবার্তা ধীর হয়, যেনো ঘোষধ্বনি!
ধানের চিটা
আর ক’টা দিন
হেমন্ত বরাবর মেনে নিবো সব হাওয়া!
সহযাত্রীর কটাক্ষ উপচানো হাসি, মেনে নিবো আর ক’টা দিন।
তারপরে ধানের চিটা, খড়ের বিচালি গায়ে
যেনতেন মাখামাখি হয়ে, থেকে যাব আমি
গাঁও গেরামে, যেখানে ক্ষুধাও কবিতা-কথা
ঘাম ঝরে প্রসন্ন হয় কৃষাণীর তামাটে শরীর!
আমাদের সময় নগন্য, মিথ্যাও প্রসাধনী আজ
যার বুকে গানের তাড়না থাকে, আর থাকে মঙ্গল-স্বর
তার দিকে অজস্র তির, ছুটে যায় সমাজ-ধারণা হতে!
সহিস
সমুদ্রডাক এসেছে নাকি
মেঘের মিশেল হয়ে আকাশদীঘায়?
আজন্ম ধীর, ভ্রমণপিপাসা ঠোঁটে, বন্দরগামী হাওয়া;
ভিতরে ক্ষয়িত সব অক্ষর, এদের তুমি চেনো নাকি মেঘা?
আমাদের বুক বরাবর কতকাল, সেলাই রয়েছে বিশ্বাসের;
অভিলিপ্সা পেরিয়ে এসে, গৌড়ের মাটি ও ধুলি, পেয়েছি হৃদয়ে-বোধে!
আল বরাবর নামে সূর্য, অস্তে। হাওয়ার যত্নে স্মৃতিও সবুজ হলো
ইতিহাস ঠেলে আসে শশাঙ্ক-মুখ, স্বজাতি-মুখর।
ডাকনাম লেখা শিখে এসে, কিস্তি জমায় কৃষক!
পাথুরে খোদাই দেখে শিখেছি আগুনমুখা ড্রাগনের রূপকথা৷
আমাদের আত্মাগুলা সেই আঁধখাওয়া আপেল নাকি? ধার ঘেঁষে লালচে দেখায় পরে?
কবিতার খাতা খুলে দিলে, হৃদয়-ঘোষিত নীলে, পাখি ওড়ে নাকি
ঈশান-কিনারে? পথিমধ্যে দেখোনি কি তুমি, রাজগোলাপের পাশে অক্ষর-পৌরুষ?
জ্ঞান আর গৌরব হেঁটে, ক্রমশ হৃদয়ে কোনো
সহিসের পদধ্বনি পেয়ে জাগে!