
জলের খোরাক
জলের খোরাক
দেখো, কোনো কিছু তুচ্ছ নয়, ফসলের মাঠে একা একা
হেঁটে হেঁটে সবুজ রঙের ভিতর বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যার মতো
অন্তরঙ্গে তুমি ভূমিগন্ধ, তুমি রাতসঙ্গী তারার ঝলক
তোমার শরীর পলকা হাওয়া
ঘাস বিছানো ঘুমে চন্দ্র বাহার
সঙ্গ দাও মানুষের চোখের গভীরে
আলিঙ্গন করো স্বদেশের দৃশ্যাবলী
আরো প্রাণ সৃজনের দিকে চলে যাও
জলের ভিতর ছুঁড়ে দেওয়া বলের দিকে
ভাসিয়ে দাও বিষাদের সমস্ত নাও
বুকের ভেতর লুকানো আলোর তরী
ছেড়ে দাও
তাকে আর রেখো না মন বন্দরে
গোধূলির রঙ নিয়ে যেতে দাও তাকে
যেতে যেতে তার দিক বদলে যাক
উলটে যাক তার দেহ
তার উলটানো দেহ হোক জলের খোরাক
মায়ার ফুলকি
একা যে বেড়ে উঠছে নিঝুম আঁধারে
সে তোমার,
আমারও—সূর্য রাঙা ঝুঁটি।
সে বেড়ে উঠছে একা
খুব ঘুটঘুটে—
ভাষাহীন অন্ধকার—রক্তাক্ত প্রান্তরে।
কবে তার বোল ফুটবে জানি না,
তবু সেই আমাদের—
মায়ার ফুলকি,
আকাঙ্ক্ষার গ্রীবাতলে জ্বলে উঠা তারা—
মাটিতে নেমে আসবে বহুদিন পরে!
প্রতীক্ষা
আরো বহুদিন প্রতীক্ষা করব।
ধুলোর জীবন খুলে গভীর রাতের নীল ঢেউ তোমাকে ছুঁয়েছে।
ঋতু বদলের হাওয়ায়
শরীর চিহ্ন খুলে নিয়ে গেছে
দুরন্ত মেঘ।
জানি পাখিদের টহল দেওয়া সমস্ত কথা ভেসে আছে ইথারে।
আমার আর কিছু বলার নেই।
জোনাকি আলোয় যতটুকু দেখা যায়
ততটুকু তোমাকে দেখব একা একা নিঝুম পাতার ফাঁকে।
চুলের কাঁটা
সব গোপন কথার ময়ূর পেখম খোলে রাতে,
ডুবে যাওয়া চাঁদের আলো
কথা বলে ওঠে।
ফুটে থাকে লৌহগাত্রে কোমল হাতের ছোঁয়া,
নীরবেই ঝরে ‘ভালো থেকো’
রুমাল বৃষ্টির শোভা।
ভীষণ জ্বরে শরীর কাঁপে, কাঁপে রঙিন ফুলের আভা।
রাত্রি শেষে শুকনো পাতায় ঘুমায় চুলের কাঁটা।
এই দেহ
সকল মৃত পাতার মত এই দেহ।
আজো চিনতে পারে নি কামরাঙা ফুল।
তবু নুনের শহর ছেড়ে
একদিন উড়ে যাবে নিঝুম কোনো বন্দরে।
অনেক দূরের বনে
ছায়া নথ থেকে
খুলে পড়বে বৃক্ষদের সমস্ত সবুজ আড়াল।
হলুদ ঘাসের দিকে তাকিয়ে থাকব আমি
আড়চোখি ওই দূরের পাহাড়
চিনতে পারবে শুধু।