
কিন্তু তারপরও তোমাকে ভালোবাসার কথা মিথ্যা নয়
মামু, এটা কোনো ধ্বজ্জভঙ্গ রোগ নয়
আমি জানি, কীভাবে তার হাটুর নিচখানি
তেলতেলে করে দিতে হয়
যাতে করে তিনি একলা হাঁটতে গেলে
পা পিছলে পড়ে যাওয়ার ভয়ে
হাত ধরে থাকেন আমার;
প্রয়োজনের সন্ধ্যায় আমি তার নুনুটাও
মালিশ করে দিতে পারি
পাতাইয়া বীচ দেখতে গিয়ে
আমি তো ম্যাসেজ পার্লার দেখে এসেছি:
আহা আতাউর!
তেলের খোঁজ? আ রে মামু কেন জানবো না!
তেলের দোকান তো পরিচিতই
সিংহ-শ্যামা-চাঁদ এরা প্রায় তো
সে দোকানে যায়
আমার দগ্ধ চোখের পর্দার ওপর পা দিয়ে!
এত এত জানি! এত এত বুঝি!
তারপরও পারি না যে!
অতএব অনিবার্য—গৃহপালিত ধাক্কা
এবং বন্ধুদের টিটকারি;
বুকে থাবা দিয়ে বলি,
দেখিস্ এবার কিন্তু সত্যি সত্যি…
কিন্তু না! তার গায়ের গন্ধ ছুঁয়ে ফিরে আসি:
কেন যে পারি না? কেন! কেন!
এভাবেই যৌবন এখন পিআরএল ছুঁই ছুঁই!
মামু , আপনাকে কিন্তু চুতমারানির
ব্যাটা বলে গাইল দিতে ইচ্ছা করছে!
ডাক্তারের কাছে কেন যাব?
আপনার ভাগ্নী জানে,
এটা কোনো ধ্বজভঙ্গ রোগ নয়।
ছি! ছি! তুমি এত্ত খারাপ!
মৌচাকে চোখ দিয়েই
চোখ নামায় নাভিতে,
লাফিয়ে ওঠে সুমন:
ছি! ছি! পরীমণি
তুমি এত্ত খারাপ!
যদি একবার—
কাছে পেতাম তোমারে,
শিখিয়ে দিতাম
কীভাবে পরতে হয়
ব্লাউজ, শাড়ি, পেটিকোট!
বেশ্যা মেয়ে!
দিন যায়, রাত আসে;
রাত নিয়ে আসে ঘুম—
ঘুমে পরীমণি
শাড়িপরা শেখাতে শেখাতে
লুঙ্গি ভিজে গেলে—
সুমনের মুখ ফস্কে
বের হয়ে আসে:
ছি! ছি! তুমি এত্ত খারাপ!
একটি খারাপ কবিতা
গেলই তো! গেলই সে। যাওয়ার আগে
পূর্ণ করে গেল নষ্টামির ষোলোকলা;
অত বেশি ক্ষতি হওয়ার কিছুটা আগে
চলে যাওয়ার কথা কি কখনো মনে হয়েছিল তার?
অর্জিত প্রভাকে কূটিল অস্ত্র বানিয়ে
দখলে নিলো সে
নন্দিত স্বপ্নমাখা নুরমহলের চাবি;
আইন ঐতিহ্য সব তছনছ করে
জেঁকে থাকলো বছরের পর বছর;
তাকে বানিয়ে রাখলো
যা-ইচ্ছে তাই করার লীলানিকেতন;
রোদেলা জ্ঞানের রাজ্যে
কৌটিল্যের আলো-আঁধারি এনে
নক্ষত্রখচিত চামচাদের ঠাঁই দিলো
গদির দুইপাশে এবং
খাজা হোসেনের তরিকায়
আড়ালে রাখলো
চল্লিশ চোরের মতো কিছু অন্ধকারশক্তি;
ফল হলো এই যে—সে ভোগ করে গেল
বাণেশ্বর বিদ্যালঙ্করের সুযোগ-সুবিধা
আর পঙ্কিলতা আর কলঙ্কে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হতে
একটি সোনার তাজ হারিয়ে ফেললো—
অমন রোদেলা গ্রহণযোগ্যতা
এবং ব্রান্ডনামের সবটুকু মহিমা;
জ্ঞান ছিল ঘূর্ণায়মান দরবেশের
আকাশছোঁয়া নাচ;
জ্ঞান ছিল খৈয়ামের পরিহাসমাখা
প্রশ্নের মিছিল;
জ্ঞান ছিল বিদ্রোহীর সব বাধ খুলে ফেলে
জেগে ওঠা আমি,
আর সে নিয়ে গেল তাকে
তারকাখচিত চামচা বানানোর খোয়াড়ে।
অতঃপর?
অতঃপর একদিন ধর্ষণরত অবস্থায়
পটল তুললো হার্ট এটাকে
ফেলে রেখে বাপের সম্পত্তি বানিয়ে
তোলা ভবন ও ভুবন!
আজ তার কবর হতে ভেসে আসে নষ্টামির দুর্গন্ধ,
নাকে রুমাল দেয়—মোগলদের হাতে রচিত
উদ্যানের অধিবাসী—দোয়েল পাপিয়া চড়ুই।
আমি জানি—জ্ঞানপাপী সে জানবে না এসব আর;
তার রেখে যাওয়া চামচারা কি
কানে পায় ভেসে আসা উচ্চারণ? নাকে পায় মরণোত্তর দুর্গন্ধ?
কিন্তু তারপরও তোমাকে ভালোবাসার কথা মিথ্যা নয়
কিন্তু তারপরও তোমার জন্য এ আমার ভালোবাসা
মিথ্যা নয়।
তোমার ওপর অত্যাচার করি
যেমনটি করি আমি
আমার নিজের ফুসফুসের ওপর
চুমু দিয়ে
বেনসন এন্ড হেজেসের ঠোঁটে:
আহ সুখ!
নিজ ফুসফুসের প্রতি ভালোবাসা
আমার মিথ্যা নয়,
মিথ্যা নয় তোমার জন্য আমার প্রেমও;
যেখানেই যাই, এ আমার অনুভবে জড়িয়ে থাকে
তোমার ঘ্রাণ
যেভাবে ‘মোগল-যুগের তিলোত্তমা
চির যুগের সুন্দরী’র
গায়ে লেগে থাকতো আতর-ই জাহাঙ্গীরী।
আমি জানি, আমার অফিসের বস অ্যানুয়াল ডিনারে
তোমার দিকে লালসার চোখে তাকায়
ভুলে গিয়ে যা ভোলার নয় তাও,
এবং সেটা জেনেও ঘৃণা লুকিয়ে চোখে
হাসিমুখ হ্যান্ডশেক করতে হয় তোমাকে,
সামুদ্রিক গভীরে বিরক্ত হয়ে ওঠো তুমি;
আমি নিজেও লজ্জিত যে, আমার মাস্ততু ভাই
তোমার ছোটবোনকে ধর্ষণ করেছিল
তার থিসিস পেপার দেখে দেওয়ার অছিলায়;
কিন্তু তারপরও তুমিই বলো, ওদের এসব দায়
কীভাবে বইতে পারে—
আমার অষ্টম এডওয়ার্ড ভালোবাসা?
কত ফাইভ স্টার হোটেল!
কত ভিভিআইপি রাস্ট্রীয় অতিথি ভবন
কত বাগানবাড়ি!
কিন্তু আমাদের ছোট্ট বাসাটি!
সেটাই তো আমাদের মুসাম্মন বুর্জ।
অনেক ঘাটতি, অনেক সীমাবদ্ধতা
দুচারটি বদাভ্যাস,
বেশ কিছু উপলব্ধিগত ভুল;
কিন্তু তোমার জন্য যে ভালোবাসা
সেখানে কোনো ঘাটতি নেই;
তোমাকে ঘিরে রচিত
আমার ভালোবাসার রাজ্যে
কেউ রচতে পারেনি
ভারত-পাকিস্তান দিনরাত;
গুচ্ছ অভ্যাসের মাঝে তোমাকে ভালোবাসাই
আমার সবচেয়ে বড় অভ্যাস,
রবীন্দ্রনাথের গান ভালোবাসো তুমি,
তাঁর সান্ধ্য উপলব্ধির মন্দিরে এসে
কড়া নেড়েছিল
কোনো এক অমীমাংসিত উপস্থিতি,
তিনি নাম দিয়েছিলেন—
জীবনদেবতা; আর তোমাকেই
সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে,
এটা আমার হৃদয়ের চূড়ান্ত উপলব্ধি;
আমার ভালোবাসা নিয়ে এরপরও
প্রশ্ন ওঠে যদি, উঠুক—
যতবারই উঠবে সেই প্রশ্ন,
ততবারই রোদেলা কণ্ঠে বলবো
তোমাকে ভালোবাসি,
যেমন করে সত্য উচ্চারণ করেন
হৃদয় মণ্ডল স্যার
বিভ্রান্ত ছাত্রদের উপর্যুপরি লিডিং কোশ্চেনের জবাবে।