
একটি নাতিদীর্ঘ রেলগাড়ীর মৃত্যু
একটি নাতিদীর্ঘ রেলগাড়ীর মৃত্যু
অবিশ্রান্ত এই শূণ্যতায় চাদর বিছায় মেঘ।
নদীর উজানী ভালোবাসায় ছলকে ওঠে আকাশ।
পথের দু’ধারে মুছে যায় ফাগুন,
শুরু হয় নিমগ্ন কালো মেঘের আগুন খাওয়া
কালো সময় ঘন হয়ে একসময় ফেঁসে যায়।
আমি কবিতা লিখি রোমান্সের, বিরহের এবং আগুনের।
শব্দেরা টগবগ করে আঙুল-ঘষায়
শিরশির করে ওঠে প্রেমিকার উর্বর দেহ।
আমি দেখি কালো মেঘের খেলা, প্রেমিকার কামনা
এবং একটি নাতিদীর্ঘ রেলগাড়ীর মৃত্যু!
শহীদ
মেঘের সারির পর হেঁটে যায় বসন্ত
যদি পায় কোনোভাবে বর্ষার দেখা।
ঘন আলো থেমে আছে পথের আঁধারে
ঢল নামে, ভেসে যায় দুর্ভাগা ফাগুন।
এইসব নিস্প্রাণ গল্পের শেষ নেই
এইসব বৃষ্টির নিজস্ব দেশ নেই।
চিল ওড়ে শেয়ালের কুকুরের পথে।
বলাকাও মাঝে মাঝে নাচে দেখি ওই
না বুঝে না বুঝে ভুলে কোকিলেরা ডাকে।
বর্ষারা পাখা মেলে ময়ূরের মতো।
প্রজাপতি মরে গেছে আলেয়ার মোহে
আমিও শহীদ হই পাখীদের দোহে।
ক্রান্তি
কতো যুগ কবিতা পড়ি না।
কতো কাল ঘুম নেই চোখে
আজকাল ভোঁ দৌড় এই পিঁপড়ের
সামনে তো শীত, কাঁপে যৌবনা ঠোঁট
স্বপ্ন দেখার ক্ষণ খাটের তলায়।
পৃথিবী উড়াল দিলো কালো মেঘ ধেয়ে
পাহাড়ের স্থিরবিদ্যা টলে গেছে আগে
স্বদেশের স্বাধীনতা পুরনো এখন
রাজাকার পতাকার ছায়ায় কেলায়।
হেসে যায় নদী, মাঠ- আগের মতোন
সূর্যটা আলো দেয় রোজ করে করে
ঘরের পর্দাগুলো বেশ পুরু, ভারী
ভেসে যায় আলোগুলো কালোর ভেলায়।
আমার কবিতা আর চোখে ধরে না
আমার বাতির তেল কেমনে ফুরায়!
প্রতিশ্রুতি
মায়া,
পিছিয়ে পড়ো না
সবুজখেকো কীটপতঙ্গের খাদে।
মসৃণ পথের দিশা সয়ং ঈশ্বরও পায়নি।
ওদিকে শান্তি নেই।
আলেয়ায় ছেয়ে গ্যাছে ডানে এবং বামের মাঠ
জলপোকাদের ছেড়ে চলে এসো
ডেউয়ের গর্জনের মতো।
সামনে তাকিয়ে পৃথিবী দ্যাখো তোমার।
ধরে নাও এই বাড়িয়ে দেয়া পাথরের হাত।
কথা দিলাম
তোমার প্রদীপের আলো সূর্য বানিয়ে দেবো।
চিঠি
বন্ধু,
কোনো এক বিকেলের আঙ্গিনায়
দাড়িয়ে থাকা শালিকের চোখে চোখ পড়ে যদি,
পড়ে নিও দুপুরের লু হাওয়ার ক্ষণ,
সকালের আলোভরা দিন।
মৌনতার যাবতীয় দুখ আর
অ-যাপিত সন্ধ্যার ভয়।
জেনে নিও
কোনভাবে কেঁদেছিলো বিষন্ন নদী
সমরযুদ্ধে কোন ছলে হেরেছিলো
আলেয়ার কাছে এক জলন্ত ভানু।
মানুষের দেহে কবে ফানুস ঢুকেছে
কোন পথে কার সাথে পালিয়েছে পথ।
সেই পথ এতোদিনে হলো না তো চেনা।
বন্ধু,
যদি তুমি দ্যাখো সেই বিতাড়িত পাখি
শুনে নিও তার কাছে সন্তান-মায়া।
বেদুঈন চাঁদের কলংক অস্থির মন।
বুঝে নিও সেইভাবে আমার বুকের পরে
খেলা করে কেলি করে শ্মশানের সুখ।