
অসম সমীকরণ
অথচ আমি প্রেমিক
আজকাল তোমাকে প্রেমিকা নয়—
অবৈধ বন্দুক মনে হয়!
আমি যেন বুলেটের মতো বন্দী ম্যাগাজিনে!
কিংবা তোমার বাড়ির পোষা বিড়ালের মতো
একবাটি দুধের জন্য আজন্ম পরাধীন পুরুষ!
তোমার দু’হাত যেদিকে যায়—
কাচের চুরির মতো আমাকেও নিয়ে যেতে চাও!
অথচ আমি প্রেমিক;
আমার হাতে লাল গোলাপ;
মাথাভর্তি এলোমেলো চুল;
চোখের ভেতর প্রেমক্ষুধা দেখেও
তুমি চিনতে পারোনি আমায়!
তবুও বলছি—
যদি আগলে রাখতে চাও, তবে স্বাধীনতা দাও;
নয়ত পরাধীন হতে-হতে; হারিয়ে যাব হঠাৎ
যেভাবে হারায়— তোমার পা থেকে খুলে পড়া নূপুর!
ফুলচাষী হোক; মাংসাশী চোখ
যে ফুল ছিড়ে তুমি গুঁজে দিলে প্রেমিকার চুলে—
আজ সন্ধ্যায় সে ফুলের গায়ে হলুদ ছিল!
রাতে বিবাহ; ভোর হতে-হতে সংসার!
অতঃপর আরও অসংখ্য কলির—
ফুটে ওঠার সুবর্ণ সুযোগ ধ্বংস করে;
বলো কী এমন সুখ তুমি পেলে?
আজ সন্ধ্যায় যে ফুলের গায়ে হলুদ ছিল—
সে ফুল গুঁজে দিয়ে প্রেমিকার চুলে!
জানি ফুল ছেড়ার অপরাধে—
কারও হয়নি সাজা কোনো কালে।
তবু তুমি ছিড়ো নাকো ফুল;
ফুল ফোটাও—ফুল ভালোবেসে!
ওই মাংসাশী চোখ—
আগে ফুলচাষী হোক; তারপর খুঁজে নিও প্রেম
খোলা চুলে গুঁজে দিও ঘাসফুলের ঘ্রাণ……
সে চলে যাওয়ার সময়
সে চলে যাওয়ার সময়—
দিয়ে গেছে এক সাগর নীরবতা।
বলে গেছে জীবন একটা শস্যক্ষেত;
যেখানে আমরা চাষ করি সুখ-দুঃখ ও মৃত্যু।
বলে গেছে বৃষ্টির আগাম ক্ষণ;
জলহীন শুকনো নদী ও প্রেমহীন হৃদয়ের পোড়া বালি;
ভিজে যাবে আগামী বর্ষায়!
নতুন মেঘের অপেক্ষায়—
আমিও নদীর মতো বেঁচে থাকি যেন।
বলে গেছে মৃত্যুর মোড়ে;
পোড় খাওয়া মানুষের অপেক্ষায়;
সিলিংফ্যানের নিচে—
দাঁড়িয়ে থাকে একটি অতিপরিচিত চেয়ার।
ওদিকে যাওয়া চূড়ান্তভাবে নিষেধ।
বলে গেছে আমি যেনো মধ্যরাতে ফোটা ফুল;
ও ভোরের শিশিরের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলি।
[বিচ্ছেদ সাময়িক অভাব;
যুদ্ধ শুরুর আগে সামান্য অবসর]
ক্ষুদ্র অবকাশ যাপনে—
আমি যেন একাকীত্বের ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট না করি!
প্রকৃতি যার হৃদয় চুরি করে; সে বাউল হয়ে যায়
তুমি চাও আমি আরও তিনবার কবুল বলে
বাহুতে জড়াই নতুন কোনো তরুণীর শরীর।
পূনরায় একটি চুক্তিপত্রে নিজের নাম লিখে
নতুন করে বাঁধি শারীরিক সংসার!
অথচ তুমিও জানো—
আমি চাইলেও এই বুক দিবে না;
কোনো তরুণীকে মাথা রাখার অনুমতি।
তুমিও জানো—
নাকের আগাম অভিযোগ;
অন্য কারও চুলের ঘ্রাণ সইতে পারবে না সে।
চোখেরও সাহস নেই;
অন্য কোনো তরুণীর চোখে নিজেকে রাখার।
হাত ত তুমি সঙ্গে নিয়েই গেছো;
যে তোমার দশ আঙুলের দাসত্ব—
গ্রহণ করেছে আমরণ।
এখন তুমিই বলো—
এভাবে কি সংসার বাঁধা যায়?
প্রকৃতি যার হৃদয় চুরি করে; সে ত বাউল হয়ে যায়!
অসম সমীকরণ
মধ্যবিত্ত প্রেমিকের ব্যথা—
না বোঝে রাষ্ট্র; না বোঝে প্রেমিকার বাবা
রাষ্ট্রীয় কিংবা পারিবারিক প্রজ্ঞাপনে
কেবলই বেড়ে যায়—
পণ্য ও প্রেমিকার; ভাত ও ভালোবাসার মূল্য।
***
একটি গোলাপ—
যার বিক্রয় মূল্য বিশ; ক্রয়মূল্য সকালের নাস্তা
সময়ের একচোখে ক্ষুধা; একচোখে প্রেম—
কোনদিকে যাবে ঘড়ি?
***
যৌবনের কাছে পরাস্ত হয়ে—
একদিন খালিপেট এনে দিলো টুকটুকে লাল—
ব্যবসায়ী ফুল—গোলাপ;
অতঃপর হস্তান্তর;
অতঃপর বলে দিলাম—
আমি এই শহরের সর্বশেষ প্রেমিক!
যার হৃদয় শুষ্ক কাঠ; শরীর শুকনো পাতা
আমাকে পোড়াতে পারো—
আমি ভালোবেসে ছাই হতে রাজি।