
অনায়াস যাতায়াত
অনায়াস যাতায়াত
অনায়াস যাতায়াত কিভাবে করো
দৃশ্যমান প্রতিবন্ধকতা না থাকলে বুঝি
ডিঙানোর প্রশ্ন আসে না।
সব সীমানাই কি রেখাঙ্কিত হতে হয়?
নাকি সব সীমানাই নমনীয়?
সিঁথির সীমানাও সহজে পেরোনো যায়!
অনায়াস যাতায়াত কিভাবে করো !
তুমি বুঝি জল?
তরল থেকে বায়বীয় হও সহজেই
বায়বীয় থেকে তরল।
এক প্রান্তর রুক্ষ করে উড়ে যাও
আরেক প্রান্তরে বৃষ্টি হয়ে ঝরো
বরফের মতো শীতল-কঠিন রুপটি
সতত গোপন রাখো।
তুমি জানো অনায়াস বদলে যাওয়া
কোনপাত্রে মানায় কেমনটা
সাবলীল যাতায়াত কিভাবে করো?
অনায়াসে কিভাবে পেরোও সিঁথির দাগটা?
ক্যাজুয়ালী বলা কথা
রাস্তার বিভাজকের দুই পারে বিপরীতমুখী দুই বন্ধু।
এক বন্ধু চেঁচিয়ে বলেছিলো, ”তোর সর্বনাশ করে দেবো”।
ক্যাজুয়ালী।
দশ বছর পরে সর্বনাশটা ঠিকই ঘটে গেলো।
আরো বছর তিনেক পরে অন্য বন্ধুটি জেনে গেলো
ক্যাজুয়ালী বলা সর্বনাশ মানে আসলেই সর্বস্ব নাশ।
তারপর ”ভিজে গন্ধ; মৃদু কলরব”।
তার কোনো দায় নেই। তাদের কোনো দায় নেই।
কথাবার্তা তিথি-নক্ষত্রে পড়ে গেলে ফ’লে যায়।
এটাও ফ’লে গেলো।
দায় নিয়তির। অথবা ”সময়ের দায়ভাগী নক্ষত্রের”।
কথাটা ক্যাজুয়ালই ছিলো। ঘটনাটা ক্যাজুয়াল থাকলো না।
ক্যাজুয়ালী বলা কথা সবসময় ক্যাজুয়াল থাকে না।
বিষন্ন সন্ধ্যাটা থেকে যাবে
বিষণ্ণ কোনো সন্ধ্যায় কথা হবে
কথা হবে রোদেলা কোনো সকাল নিয়ে
কথা হবে মায়াবী কোনো বিকেল নিয়ে
যা ছিলো, কিন্তু নেই—তা নিয়ে
আর যা ছিলো না, কিন্তু থাকতে পারতো—তা নিয়ে।
তারপর বিষণ্ণ সন্ধ্যাটা যেদিন হারিয়ে যাবে
সেদিন আর কথা হবে না
দুজনেই একা একা ভাববে, যা ছিলো তা থাকার না।
রোদেলা সকাল তাই থাকলো না
মায়াবী বিকেল থাকলো না
ফাঁকতালে থেকে গেলো বিষন্ন সন্ধ্যার স্মৃতি।
তাই নিয়ে রাত গভীর হয়
মন ভরে যায় নিকষ-কালো শূন্যতায়
শূন্য থাকে না কিছুই; অন্তত শূন্যতা থেকে যায়।
ক্ষরণের পরের মানুষ
রক্তক্ষরণে নুয়ে পড়া মানুষ
দ্বৈবাৎ যদি উঠে দাঁড়ায়
ঘাতক কাঁটার কাছ থেকে দূরে সরে যায়।
সম্পর্ক বাঁচাতেই এতো আয়োজন
শর্ত সেই সম্পর্কেরই বিসর্জন
সম্পর্কটা বাঁচানো কতোটা প্রয়োজন?
অথবা সে ক্ষরণ ভালোবাসে
তিলে তিলে নিঃস্ব-রিক্ত হতে চায়
আঘাত সরিয়ে অভ্যস্ত হয় কাঁটার খোঁচায়।
বড়বেলার নদী
মনখারাপে ছোটবেলার নদীর কাছেই যেতে হয়
বড়বেলায় চোখে জল থাকে
যার বুকে জল আছে সে`ই ধরতে পারে চোখের জল।
অন্যকোন প্রান্তরে চোখের জল ফেলে লাভ নেই
জল তার অস্তিত্ব হারায়
অথচ নদী জলকে ভাসায়, ছোটনদী থেকে বড় নদী
বড় নদী থেকে সমুদ্র
সে ভাসিয়ে নিয়ে যায় চোখের জলের ধন।
মনখারাপে সুখী মানুষের কাছে যেতে নেই
সুখ সংক্রামক নয়
দুঃখীর দুঃখ ম্লান করে দেয় সুখীর উজ্জ্বল দিন।